পবিত্র লাইলাতুল কদর, বা শবেকদর, রমজান মাসের সবচেয়ে মহিমান্বিত রাত হিসেবে পরিচিত। মহান আল্লাহ এ রাতটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন, যেহেতু এই রাতে আল্লাহ তাঁর অফুরন্ত রহমত ও মাগফিরাতের দরজা খুলে দেন। পবিত্র কোরআনে এ রাতের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, "কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম" (সুরা: কদর, আয়াত: ১-৩)। এই রাতের প্রতি মুসলমানদের অনেক বেশি গুরুত্ব রয়েছে এবং বিশেষ আমল করে এ রাতটিকে আল্লাহর নিকট মর্যাদাপূর্ণ করতে পারে।
এ রাতের বিশেষ ফজিলতকে অনুসরণ করতে, মুসলমানরা কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ, দোয়া, জিকির, এবং দান-সদকা করতে উত্সাহিত হন। মুসলিমরা রমজানের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতে গিয়ে অথবা বাড়িতেই নেক আমল করতে মনোনিবেশ করেন।
রমজান মাসের শুরু থেকেই মুসলমানরা বিশেষভাবে কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন হন, এবং এই রাতেও তা অব্যাহত রাখেন। মহানবী (সা.) রমজান মাসে বিশেষত জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন এবং তাকে আদর্শ অনুসরণ করে ইমামরা এই মাসে কোরআন পাঠে মনোযোগী হতেন।
এছাড়া, রাতের নামাজ, বিশেষত তাহাজ্জুদ এবং তারাবির নামাজ, আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের প্রত্যাশায় রমজান মাসে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামাজ) আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস: ৩৭)
এ রাতের আমল আরো বেশি পুরস্কৃত হয় যদি বিশেষ দোয়া করা হয়, যেমন "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি"—এই দোয়া আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বশেষ, রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। মহানবী (সা.) প্রতি রমজানে এই সময়টাতে ইতিকাফ করতেন, এবং তার সাহাবিরাও এই আমল অনুসরণ করতেন।
লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে আদায় করা আমলগুলি যেমন নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, এবং দান-সদকা আল্লাহর কাছ থেকে বরকত ও মাগফিরাত লাভের পথ প্রশস্ত করে। তাই এই রাতটি উপযুক্তভাবে ইবাদত-বন্দেগি করে কাটানো উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ রাতের বরকত লাভ করার তাওফিক দিন। আমিন!