logo
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১
সাইবার সুরক্ষা / অধ্যাদেশ প্রণয়নে সব অংশীজনের অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার আহ্বান ২৭ নাগরিকের নিন্দা
সবজির বাজারে দাম কমলেও মাছ-মুরগির বাজার চড়া
শীতের আগমনে বাজারে মৌসুম সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এতে সবজির দাম কিছুটা স্থীতিশীল রয়েছে। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চাল। আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপির পিসও ৩০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, গোল বেগুন ৬০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটোর কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবজির দাম কমলেও মাছ ও মুরগি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে হতাশ ক্রেতা সাধারণ। সবজির দাম কম হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে অনেকের মধ্যে। আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বসুন্ধরা, মিরপুর, হাতিরপুল, জিগাতলা ও মিরপুরসহ বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, পটোল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শালগম ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, নতুন আলু ৫০ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও প্রতিপিস লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। মাছের বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ এক হাজার ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা, শিং এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা এবং পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। ইলিশ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২৫০ টাকা। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ তিন হাজার ২০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দুই হাজার টাকা হারে, আর ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার ৪০০ টাকা ও ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়। মুরগির বাজারও চড়া।  বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়। মাংসের বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।  অপরদিকে ডিমের আড়তে দেখা গেছে, প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।   জাগতিক /আফরোজা  
বড়দিনে রাজধানীতে ফানুস-পটকা-আতশবাজি নিষিদ্ধ
মা ও ৯ বছরের শিশু গুম  / ১০ বছর ধরে গুম হওয়াপরিবারের জন্য অপেক্ষায় 
বিশ্বের শীর্ষ ধনী নারীদের তালিকা শীর্ষে ফ্রাঁসোয়া বেথেনকোর্ট মেয়ার্স
বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ
প্লাস্টিকজাত সামগ্রী থেকে বাড়ছে স্তন ক্যানসারের আশঙ্কা 
প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্য থেকে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে। প্লাস্টিকে এমন ৪০০ রকম রাসায়নিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা মানবশরীরের জন্য বিষ। এমনটাই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। ‘দি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’র একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, খাদ্যপণ্য ও নিত্যব্যবহার্য অনেক সামগ্রীতেই প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যা প্রতিনিয়তই শরীরে প্রবেশ করছে। এই ধরনের প্লাস্টিক ক্যানসার রোগের আশঙ্কা বহু গুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্লাস্টিকের দ্রব্য তৈরি করতে ‘বিপিএ’ (বিসফেনল-এ) রাসায়নিকটি ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিকটি খুব সহজে নষ্ট করা যায় না। তাই সেটি পরিবেশেই থেকে যায়। ক্ষুদ্র আকারে খাবারের সঙ্গে মিশে তা মানব শরীরে প্রবেশ করে এবং নানা রকম রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।  দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’-র তথ্য বলছে, প্রায় ১৬ হাজার রাসায়নিক থাকে প্লাস্টিকে। যার মধ্যে পিএফএএস, প্যারাবেনস, অ্যারোমাটিক অ্যামাইনের মতো অন্তত ৪০০ রকম রাসায়নিক মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই সব রাসায়নিক প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিসপত্র থেকেই শরীরে ঢুকছে। কিভাবে ঢুকছে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, বাজারে যে চিনি ও লবণ বিক্রি হচ্ছে, তাতেও মিশে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। শুধু খোলা বাজারে নয়, অনলাইনেও যে লবণ ও চিনি পাওয়া যায়, সেগুলোতেও প্লাস্টিকের অস্তিত্ব রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আবার, বাড়িতে অফিসে, স্কুল-কলেজ, কাজের জায়গায় বেশির ভাগ মানুষই প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করেন। প্লাস্টিকের বোতলভর্তি পানিকে প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে, এমন তথ্য আগেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।  সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে বোতলের পানিতে। এদের দৈর্ঘ্য এক থেকে পাঁচ হাজার মাইক্রোমিটারের মতো, যা মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাগুলোই মিশে থাকে। প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খেলে সেই প্লাস্টিকের কণাগুলো শরীরে ঢুকে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। ক্ষতিকর সেই সব উপাদান মানুষের শরীরের জন্য বিষ। বাড়িতেও খাবার খাওয়ার জন্যও অনেকে প্লাস্টিকের প্লেট, চামচ ইত্যাদি ব্যবহার করেন। প্লাস্টিকের কাপে চা বা কফি খাওয়া হয়। এইসব থেকেও প্লাস্টিকের কণা শরীরে প্রবেশ করে, যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ বলেই মনে করছেন গবেষকরা। তাই প্লাস্টিকের সামগ্রীর বদলে তার বিকল্প কিছু ব্যবহারেই বেশি জোর দিচ্ছেন তারা।   জাগতিক/ আফরোজা 
গিনেস বুকে নাম লেখালো বাংলাদেশী স্কুলছাত্র
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি মাধ্যমিক পড়ুয়া ছাত্র এইচ এম নাঈম রানা। ইংরেজি বর্ণমালার ২৬টি বর্ণ মাত্র ১ দশমিক ৭২ সেকেন্ডে উচ্চারণ করে এই খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। এতে উচ্ছসিত তার পরিবার ও বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।  সম্প্রতি গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি সনদ পাওয়ার পর শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ন্যায়  জাগতিকের নিকট এ তথ্য জানান তিনি। নাঈম নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের নিচু কলোনি এলাকার সেনা সদস্য রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় ইংরেজি ২৬টি বর্ণ দ্রুত সময়ে উচ্চারণের অনুশীলন করছিলেন তিনি। এরপর গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করা হলে গত ১৬ আগস্ট ভিডিও কলে পরীক্ষাটি গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। নাঈম বলেন, মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আমার রেকর্ডের স্বীকৃতির সনদপত্রটি প্রদান করা হয়। তিনি তার আগামীর প্রস্তুতি সম্পর্কে বলেন যে তিনি শরীরে দ্রুত সময়ে স্টিকি নোট লাগিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করতে ইচ্ছুক। বর্তমানে এক মিনিটে শরীরে ৬১টি স্টিকি নোট লাগিয়ে গিনেস বুকের ওয়ার্ল্ড রেকর্ড রয়েছে। আমি সে রেকর্ড ভাঙতে চাই। জানা যায়, নাঈমের বাবা রফিকুল ইসলাম সৈয়দপুর সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন শহরের নিচু কলোনি এলাকায়। নাঈমের জন্ম এই সৈয়দপুর শহরেই। তিনি সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের নবম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যায়নরত ছিলেন। পরে দাদা বাড়ি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভোজনপুর গ্রামের একটি স্কুলে ভর্তি হন তিনি। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের উপাধ্যক্ষ (ইংলিশ মিডিয়াম) শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থী এ গৌরব অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে সে আরও ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করুক এই কামনা করি।
মহা পুরষ্কারের ঘোষণা শীতকালের যে ৩ আমলে পাবেন
শীতকাল ইবাদতের বসন্তকাল। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য মহান আল্লাহর দান। এ সময় কুয়াশা ও শিশিরের কোমলতায় প্রকৃতি সাজে নতুনরূপে। এসব নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় করা মুমিনের কর্তব্য। এখানে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে শীতকালে মুমিনের করণীয় ৩টি আমল তুলে ধরা হলো: বেশি বেশি রোজা রাখা শীতকালে দিন থাকে খুবই ছোট। এতে রোজা রাখা খুবই সহজ হয়। তাই এ ঋতুতে সম্ভব হলে বেশি বেশি রোজা রাখা যায়। হজরত আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শীতকালের গনিমত হচ্ছে এ সময় রোজা রাখা।(তিরমিজি: ৭৯৫) নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় তাহাজ্জুদ নামাজ সব সময় পড়া যায়। তবে শীতকালে রাত অনেক লম্বা হয়। লম্বা সময় ঘুমিয়ে আবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়া সহজ হয়। মহান আল্লাহ ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদাহ: ১৬)   অসহায়দের শীতবস্ত্র দান করা শীতকালে অসহায় মানুষ বস্ত্রের অভাবে নিদারুণ কষ্ট করে। একা ভালো থাকা ইসলামের শিক্ষা নয়। বরং সমাজের সবার প্রতি সহানুভূতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কর্তব্য। শীতবস্ত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইমানি দায়িত্ব। মহান আল্লাহ এর মহা পুরস্কার মহা মানবের চিন্তার বাহিরে। জাগতিক / আ-রহমান।
খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদনে ব্যস্ত জয়পুরহাটের গাছিরা
শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে জয়পুরহাটে। বাজারে চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উৎপাদনকারীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে গুড়ে রাসায়নিক মেশানো বন্ধে তদারকির চলছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ভোরে কুয়াশা ভেদ করে পূর্বদিগন্তে সূর্যের আভা। সকালের সূর্য আলো ছড়ানোর আগেই খেজুরের রস আহরণে বেরিয়ে পড়েন গাছিরা। হাঁড়িতে সংগৃহীত রস নিয়ে ছুটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের শুরুতেই জয়পুরহাটে আসা রাজশাহীর গাছিরা গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরো মৌসুম তারা গুড় উৎপাদন করে ফিরবেন স্বজনদের কাছে। বাজারে চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উৎপাদনকারীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। উৎপাদনকারীরা বলেন, আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাড়ি বসানো হয়। এরপর মাঝরাতে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়। গুড় উৎপাদনকারী এক ব্যক্তি জানান, প্রতিদিন ২০০ গাছ থেকে ২০-২২ মণ রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। প্রতিবছর শীত মৌসুমসহ চার মাসে মোট ১০-১২ লাখ টাকার গুড় বিক্রি হয়। গুড় কিনতে অনেক ক্রেতা ভোর থেকেই গাছিদের কাছে হাজির হচ্ছেন। তারা বলেন, ভেজালমুক্ত রস ও গুড় নেয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা। খেজুর গুড়ে রাসায়নিক মিশ্রণ বন্ধ করতে তদারকির কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। জয়পুরহাট কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদনের সময় যাতে কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজার সিন্ডিকেট প্রতিরোধে মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, জয়পুরহাটে দৈনিক প্রায় ৬৮ মণ গুড় উৎপাদন হয়। যার পাইকারি মূল্য ৪ লাখ টাকার বেশি।  জাগতিক /আ-রহমান।
সহিংসতা বন্ধে নারী মৈত্রীর ১৬ দিনের কর্মসূচি
নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা নির্মূলে উন্নয়ন সংস্থা নারী মৈত্রী বেইজিং ঘোষণাপত্র ও কর্মসূচিতে উল্লেখ করা ‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৬ দিনের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রসঙ্গত, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধ করে সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ৪২ বছর আগে গড়ে উঠেছিল নারী মৈত্রী।   ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসের সঙ্গে মিল রেখে নারী মৈত্রীর প্রধান কার্যালয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির নারী কর্মীরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার প্রভাব নিয়ে আলোচনা, সুরক্ষা নীতি নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং ভবিষ্যতের কৌশল নির্ধারণ করবেন। এই কর্মসূচি ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত চলবে, যা নারী ও কন্যাশিশুর জন্য একটি নিরাপদ ও সমতাভিত্তিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবে।   নারী মৈত্রী ১৬ দিনের কার্যক্রমের লক্ষ্য একীভূত করে দেশজুড়ে গ্রামীণ ও নগর উভয় এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি, সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সার্ভাইভার ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে– বাল্যবিয়ে, গার্হস্থ্য সহিংসতা, মৃত্যু নিবন্ধন এবং তামাক ব্যবহারের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়গুলো তুলে ধরবে। এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে– বাড়ি বাড়ি গিয়ে আলোচনা, উঠান বৈঠক এবং ব্যানার ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে ও অপ্রাপ্তবয়স্ক গর্ভধারণ প্রতিরোধ, মোবাইল ভ্যান ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, গোলটেবিল বৈঠক এবং র‍্যালি, নাটিকা, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং রান্নার প্রতিযোগিতার মতো কার্যক্রম। এসব কার্যক্রমে থাকবে রাজবাড়ী, রায়েরবাজার ও কল্যাণপুরের মতো কমিউনিটি পর্যায়ের কিশোর-কিশোরী এবং দম্পতিরা। লালবাগ ও হাজারীবাগের বস্তি এলাকাগুলোতেও আলোচনা সভা, মিছিল, রোল-প্লে নাটক, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং দম্পতিদের অংশগ্রহণে সৃজনশীল এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।   নগর মাতৃসদন এবং পিএইচসিসি কেন্দ্রগুলোতে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনায় নারী অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করবে। সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত, ন্যায়বিচারের প্রচার ও নারী মৃত্যুর নিবন্ধন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে। তামাক ব্যবহার ও পারিবারিক সহিংসতার আন্তঃসংযোগ তুলে ধরে নারীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে।   ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নারী মৈত্রী, বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন করার পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সংগঠনটির সমন্বিত কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে আইনি সহায়তা, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও কমিউনিটিভিত্তিক ক্যাম্পেইন।   নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। বাংলাদেশে এখনও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। লাখো নারী ও কন্যা শিশু হয়রানির শিকার হলেও তাদের কণ্ঠস্বর অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। এ বছর আমরা সহিংসতা প্রতিরোধ ও নির্মূলের বার্তাটি জোরালোভাবে প্রচার করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ক্যাম্পেইন একটি কার্যকর পরিবর্তন আনার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ করে দেবে।
তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে সড়ক অবরোধ / ঢাকা এক দুর্ভোগের নগরী
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠণের পর থেকে প্রতিনিয়ত চলছে রাজপথে অন্দোলন ও মিছিল মিটিং ও সমাবেশ। ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী হামলার শিকার পুলিশ বাহিনী এখনো বেরুতে পারেনি হামলা আর সহকর্মী হত্যার ট্রোমা থেকে।  এরই মাঝে কোন পূর্ব-ঘোষনা ছাড়া অপরিকল্পিত এসব আন্দেলন-বিক্ষোভ কর্মসূচি নাগরিক জীবনের অনাকাঙ্খিত দুর্ভোগ বাড়িয়েই চলেছে। সাম্প্রতিক এই ধারাবাহিক আন্দোলনের (আনসার, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের দাবি আদায়, চাকরির বয়স ৩৫ করার দাবি, ছাত্র-ছাত্রীদের অটো পাশ, তিতুমীর  কলেজসহ সাত কলেজের বিশ্ববিদ্যালয় করা দাবি ও সবশেষ অটোরিকশা চলাচলের দাবি) তোড়ে রাজধানী ঢাকার সড়ক ও রেলপথের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বিমানবন্দরগামীরাও।   এই আন্দোলনের ধারবাহিকতায় ঢাকার সাথে একদিকে যেমন বন্ধ হয়ে যায় সড়ক পথের যোগাযোগ তেমনি রাজধানী সংলগ্ন সাভার, টঙ্গি-গাজীপুরের পোশাকখাত শ্রমিকরা দফায় দফায় বন্ধ করে দেন আন্তঃজেলার সড়কপথ। সবশেষ অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনে প্রথমবারের মতো কিছু সময় বন্ধ থাকে পদ্মা সেতুর রেল যোগাযোগ। এই আন্দোলনে দুর্ভোগের তালিকাতে সাধারণ মানুষ আর অফিসগামীদের পাশাপাশি রয়েছে পরীক্ষার্থী, চিকিৎসা প্রত্যাশী গর্ভবতী নারী, বিদেশগামী প্রবাসি থেকে সব শ্রেণী পেশার মানুষ।     এসময় আন্দোলনকারীদের শিক্ষার্থীদের হামলায় মহাখালী এলাকায় রক্তাক্ত হন শিশু নারীসহ একাধিক রেলযাত্রী, ঢাকা কলেজ এলাকায় সেনা সদস্যসহ অনেকেই।  সবশেষ আন্দোলনে বন্ধের দিন শুক্রবারও রাজপথে উচ্চ আদালতের নির্দেশের নিষিদ্ধ অটোরিকসা সংশ্লিষ্টরা। যদিও গোয়েন্দা তথ্য বলছে অটোরিকশা চালকদের ব্যানারে নামাদের বেশির ভাগই প্রায় আট হাজার কোটি টাকার বাৎসরিক চাঁদার সুবিধাভোগি স্বার্থান্বেষীরা। গতকাল শুক্রবার তৃতীয় দিনের মত অটোরিকসা চালু থাকার পক্ষে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নামেন রাজধানীর জুরাইন এলাকায়। ঢাকা মাওয়া ও ঢাকা নারায়নগঞ্জ মহাসড়কসহ রেলপথও অবরোধ করেন। ২১ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজধানীর সাথে। যানজট ছড়িয়ে পরে পুরো রাজধানী জুড়ে। এসময় এক পথচারী অভিযোগের সুবে বলেন, কদিন পর আন্দোলন করবে ভিক্ষুকরা। ৫০টাকার নিচে ভিক্ষা না নেয়ার দাবিতে রাস্তা আটকাবে।  আন্দোলনের বিষয়ে ডিসি ওয়ারী আবু সালেহ বলেন, আদালতের নির্দেশের পর এধরনের আন্দোলন গ্রহণযোগ্য নয়। জনস্বার্থে পুলিশ এধরণের আন্দোলনকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিহত করবে। নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, স্বাধীনতা মানে কি যা ইচ্ছে তা-ই করা? অন্যের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা? এখন তো মনে হচ্ছে স্বাধীনতা মানেই সড়ক অবরোধ, রেলপথ অবরোধ। এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, আমার ক্ষমতা আছে, ফলে আমি যা খুশি তা-ই করতে পারি।পরিস্থিতি এখন অনাচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। পরষ্পর পরষ্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানবোধ থাকাটা জরুরি।    তিনি আরোও বলেন, সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশেই দাবি জানানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু জায়গা আছে। রাজনৈতিক দাবি হোক আর সামাজিক দাবি হোক- সবাই সেখানে গিয়ে দাবি জানান। এখানেও সেরকম নির্দিষ্ট জায়গা করে দেওয়া দরকার। সেই জায়গা কিন্তু আমাদের আছে। চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দাবি আদায়ের আন্দোলন হতে পারে না। নব্বইয়ের দশকের শেষে দিকে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে দাবি আদায়ের যে রেওয়াজ চালু হয়েছে, এখনো সেটা চলছে। এই অবস্থার নিরসন দরবার। হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল তিন দিনের মধ্যে বন্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপের নির্দেশ দেন।  এদিকে ঢাকায় যখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন, তখন এটা বন্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন।   একই দিন রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় আফসানা করিম নামের এক ছাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তারা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের দাবি জানান।    প্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ী ইমরুল হাসান বলেন, সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে আগারগাঁওয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের অবরোধের মধ্যে পড়েছি। ফলে অনেকদূর ঘুরে ইস্টার্নপ্লাজার অফিসে আসতে হয়েছে। সরকারকে আসলে এসব ব্যাপারে আরো বেশি উদ্যোগী হতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও শক্ত হতে হবে। এমনিতেই তো যানজটের কারণে ঢাকা শহরে চলাফেরা করা মুশকিল। ফুটপাতে হাঁটা যায় না। অগ্নিমূল্যের কারণে বাজারে গিয়ে সবজি কেনা যায় না। তাহলে এই শহরের মানুষ যাবে কোথায়?।  ঠিক আগের দিন, অর্থাৎ, গত বুধবার রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন বেলা পৌনে ৩টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে সায়েন্স ল্যাব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের একটি বাসে ওঠাকে কেন্দ্র করে সিটি কলেজের কয়েকজ শিক্ষার্থীর হাতাহাতি হয়।  এর জের ধরে সকালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা গিয়ে সিটি কলেজে ভাঙচুর চালায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তারা সায়েন্স ল্যাবের দিকে এগিয়ে যায়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও বেরিয়ে এসে সায়েন্স ল্যাবের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হলে এলাকাটি একরকম রণক্ষেত্রের রূপ নেয়।   গত রবিবার লটারি নয়, মেধা যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভর্তির দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। আসাদগেট থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও অবশ্য দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সড়ক ছেড়ে যান শিক্ষার্থীরা। এরপর ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।   রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক রুবাইদ হোসেন বলেন, আমার বাসা মিরপুর-১০ নম্বরে। মেয়ে পড়ে মোহাম্মদপুরের গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। তার ক্লাস ছুটি হয় ১২টায়। রোববার মেয়েকে স্কুলে আনতে গিয়ে রেসিডেন্সিয়ালের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে পথে আটকে যায়। স্কুলে পৌঁছতে ১টা বেজে যায়। দেরি হওয়ার কারণে মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, জ্বর এসে গেছে। অথচ বুধবার থেকে তার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এভাবে যদি কথায় কথায় সবাই সড়ক অবরোধ করে, তাহলে সাধারণ মানুষ কিভাবে চলবেন? দুইটায় আমার হাসপাতালের ডিউটিতে যোগ দেওয়ার কথা। সেখানে যেতে সাড়ে ৩টা বেজে গেছে। প্রতিনিয়তই আমরা এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিদিনই কেউ-না-কেউ রাস্তায় নেমে দাবি জানাচ্ছেন। চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে কয়েকদিন আগে হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তাদের দাবির মুখে চাকরিতে যোগ দেয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করা হয়। এরপর সচিবালয় ঘেরাও করে ৭ দফা দাবি জানায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি বাস্তবায়নে কমিটি করা হয়েছে।  এছাড়া সোমবার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ তিনদফা দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে দিনভর আন্দোলন করেছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। এতে মহাখালী থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কের দুই পাশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকরা। অনেকে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা হন। আন্দোলন চলাকালে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসা আন্তঃনগর ট্রেন ‘উপকূল এক্সপ্রেস' মহাখালীতে পৌঁছলে চলন্ত ট্রেনে আন্দোলনকারীরা হামলা-ভাঙচুর চালায়। এতে শিশুসহ অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হন। পরে তাদের দাবি পর্যালোচনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রনালয়। রাজধানীর সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নের উপায় জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্ল্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দাবি-দাওয়ার পরিমান অনেক বেড়ে গেছে।    তবে এক্ষুনি সরকারের শক্ত অবস্থানের পক্ষে নন অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর যারা কথা বলতে পারেনি, এখন তারা কথা বলছে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এতদিন কথা বলেননি কেন? তারা তো কথা বলতে পারেনি, বলতে গেলেই তাদের গুম-খুন হওয়ার আশঙ্কা ছিল। বলতে যে পারেনি, এই কারণেই তো জুলাইয়ের আন্দোলনে তারা অংশ নিয়েছে। ফলে এই সরকারের পক্ষে শক্ত হওয়া মুশকিল। এখন যারা দাবি করছে, তাদের অন্তত গুম-খুন হওয়ার ভয় নেই। ফলে তারা কথা বলার সাহস পাচ্ছেন। নির্বাচন যত এদিয়ে আসবে, এই দাবি হয়ত আরো বাড়বে। এই মুহুর্তে পরিস্থিতির উত্তরণে সরকারের শক্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই। আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
একটি চ্যালেঞ্জিং ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশা / মফস্বলে নারী সাংবাদিকতার প্রসার ঘটেছে
গণমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমকে সমাজের আয়না হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের প্রসার যেমন ঘটেছে তেমনি সাংবাদিকতার প্রসারও ঘটেছে। পুরুষের পাশাপাশি নারী সাংবাদিকরাও এখন এই পেশায় এগিয়ে আসছেন। গণমাধ্যমে পুরুষ সংবাদিকরা যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন তেমনি এক্ষেত্রে নারী সাংবাদিকরাও পিছিয়ে আছেন বলে মনে হয় না। সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হলেও বরং কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারী সাংবাদিকরা এগিয়ে আছেন। তবে সব গণমাধ্যমে যে নারীরা এগিয়ে আছেন সেটা বলা যাচ্ছে না।   সাম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানববাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া: নারী সাংবাদিকদের হয়রানির একটি জরিপে বেরিয়ে এসেছে এক ভায়াবহ তথ্য, তার আনশিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, শুধুমাত্র যে সকল গণমাধ্যমে নারী সাংবাদিকদের জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে সেইসব গণমাধ্যমে নারী সাংবাদিকরা পুরুষ সাংবাদিকের তুলনায় অনেক ভাল করেছেন। তবে এটা রাজধানী ঢাকার চিত্র হলেও মফস্বলের নারী সাংবাদিকেরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছেন। কারন মফস্বলে অফিসগুলোতে অনেকক্ষেত্রেই নারী সাংবাদিকদের কাজ করার মত অনুকূল পরিবেশ নেই।   নারী সাংবাদিকরা অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তা কিংবা সহকর্মীদের দ্বারা মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে হরহামেশাই। আর এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয় না। কারণ অনেকক্ষেত্রেই অফিসের শীর্ষ কর্তারাই এজন্য দায়ী এবং তারা নিজেরাই অপরাধী। শুধু তাই নয় এমনকি তাদের পারিশ্রমিক ও নিরাপত্তার বিষয়টিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত থেকে যায়। আর এসব কারনে বেশিরভাগ নারী সাংবাদিক কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও মফস্বলের অনেক নারী সাংবাদিকতার মত মহান এই পেশায় দক্ষতার ছাপ রাখতে পারছে না। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েও দেখা যায় নারী সাংবাদিকরা প্রায়সময় নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সমাজের দৃষ্কৃতিকারিদের অপকর্ম, দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা ও রাজনৈতিক দুর্বত্তায়নের সংবাদ প্রকাশ করা হলে। নারী সাংবাদিককে প্রতিনিয়ত আজে বাজে ইঙ্গিত করে কথা বলে দৃষ্কৃতিকারিরা।    এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ফেসবুক, টুইটার, ও ইউটিউবে নারী সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। প্রথমে বন্ধুত্ব, এরপর ছলেবলে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ক্ষুদে বার্তা বা কল দেওয়া শুরু করে, পরে ভিডিও কল দিতে চাওয়া, এসব পরিস্থিতিই প্রতিদিন একজন নারী সাংবাদিকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এছাড়াও হামলা জোরপূর্বক যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের ভয়তো রয়েছে। এরপর ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আজেবাজে ছবি বা বার্তা পাঠানো হয় নারী সাংবাদিককে। এসবের বেশিরভাগ অ্যাকাউন্ট থেকে প্রেমের প্রস্তাব, উপহার পাঠানো, আবার নারী সাংবাদিকের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।   আরো বলা যায়, সম্প্রতি এক নারী সাংবাদিককে ছলনা করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করলে সেটি পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এক্ষেত্রে ছেলেটি পার পেয়ে গেলেও মেয়েটি ফেঁসে যায়। বেশি ভাগ তরুণী নারী সাংবাদিক এই পেশায় ঢুকেই এরকম ফাঁদে পড়েছেন। কিন্তু লজ্জায় তারা এসব বিষয় বলতে পারেন না। ভালো বেতন ও সুযোগ সুবিধার কথা বলে ফাঁদে ফেলে। ক্ষেত্র বিশেষে বাধ্য করা হচ্ছে তরুণী নারী সাংবাদিকদের।   অপর এক নারী সাংবাদিক দুই সন্তানের মা। সহকর্মী সাংবাদিক নিয়মিত ফেসবুক মেসেঞ্জারে যৌন হয়রানিমূলক খুদে বার্তা পাঠান। প্রায়ই তাকে পর্নোগ্রাফিক নানা কিছু পাঠান এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনে জোরাজুরি করে কথা বলেতে থাকেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ওই ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণ করার প্রস্তাব দেয়, এমনকি টাকা-পয়সা দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। তাকে। ওই ব্যক্তির পুরোনো আইডির সাথে নারী সাংবাদিকের অ্যাড ছিল, পরে আর আর একটি আইডি থেকে ওই সাংবাদিক সহকর্মী বন্ধু ফেসবুক ম্যাসেজারে যৌন হয়রানিমূলক খুদে বার্তা পাঠানো শুরু করেন। প্রায়ই তাকে পর্নোগ্রাফিক জাতীয় নানা কিছু পাঠান এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনে নানা প্রস্তাব দিতে থাকেন।। এমন পরিস্থিতিতে নারী সাংবাদিক দিশেহারা হয়ে পেশার প্রতি আস্থা হাড়িয়ে ফেলে। তবে এমন সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করেও নারীরা মিড়িয়ায় টিকে রয়েছে এবং দিন দিন সাংবাদিকতার প্রসার ঘটছে। তবে এসব ঘটনায় শুধু নারী নয়, বন্ধু হিসেবে অন্য সহকর্মীরা এগিয়ে এলে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে।   এক সময়ের পুরুষ আধিপত্যের একটি পেশা সাংবাদিকতা। ধরে নেওয়া হয় এই পেশা নারীর জন্য অনুকূল নয়। মনে করা হয় রাত-বিরাতে সংবাদের পেছনে ছোটা, যখন তখন অফিসে যাওয়া নারীদের পক্ষে সম্ভব নয়। নিয়োগের সময় নিরুৎসাহিত করা হয়। পরিবার থেকে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়েরা আসেন এই পেশাটাকে ভালোবেসে। তারপরও টিকে থাকতে না পেয়ে ঝড়ে পড়ে। যাচ্ছে।   এর অন্যতম কারণ চাকরির নিরাপত্তা নেই, বেতনের নিশ্চয়তা নেই, কাজের মূল্যায়ন হয় না, দীর্ঘদিন কাজ করার পর পদোন্নতি হয় না, এমনকি পারিবারিক চাপ তো আছেই। যেহেতু অন্য আর দশটা পেশার মতো সাংবাদিকতা নয়। এখানে যথেষ্ট ছাড় দিতে হয় একজন নারীকে। পরিবারকে বঞ্চিত করছেন- সময় দিতে পারছেন না। ফলে অনেক ত্যাগ শিকার করে এই পেশায় এলেও যথাযথ মূল্যায়ন না হলে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।   অনেক অফিসে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে এসে তার আগের জায়গাটা ফিরে পাচ্ছেন না। আগের দায়িত্ব পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি বাধ্য করে তাকে কাজ ছেড়ে দিতে। কখনোবা নিজে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়ে কিছু করার চেষ্টা করেন। তার ভালোবাসার সাংবাদিকতা করা আর হয়ে ওঠে না। পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুরুষকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। ধরে নেওয়া হয় পুরুষের পদোন্নতি প্রয়োজন, তাকে সংসার চালাতে হয়। পদোন্নতি হয় না আরেকটা কারণে, কর্তৃপক্ষ মনে। করে নারীকে বস হিসেবে মানবে না। কিন্তু বস নারী-পুরুষ যাই হোক যিনি কাজ করবেন তাকে তো অফিসের নিয়মকানুন মানতেই হবে। নারী বলে কেউ তো বঞ্চিত হতে পারেন না। কিন্তু নারী বলে তিনি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারকদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নারীর কাজের কোনো মূল্যায়ন হয় না।   তবে মেয়েদের কাজের প্রতি পরিবারের নৈতিক সমর্থন থাকতে হবে। তাহলে। তারা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। এছাড়া সকল বিষয়ে প্রযুক্তি মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা ফাঁদগুলো সম্পর্কেও তাদের অবহিত করতে হবে।