খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদনে ব্যস্ত জয়পুরহাটের গাছিরা
শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে জয়পুরহাটে। বাজারে চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উৎপাদনকারীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে গুড়ে রাসায়নিক মেশানো বন্ধে তদারকির চলছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
ভোরে কুয়াশা ভেদ করে পূর্বদিগন্তে সূর্যের আভা। সকালের সূর্য আলো ছড়ানোর আগেই খেজুরের রস আহরণে বেরিয়ে পড়েন গাছিরা। হাঁড়িতে সংগৃহীত রস নিয়ে ছুটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে।
প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের শুরুতেই জয়পুরহাটে আসা রাজশাহীর গাছিরা গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরো মৌসুম তারা গুড় উৎপাদন করে ফিরবেন স্বজনদের কাছে। বাজারে চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উৎপাদনকারীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
উৎপাদনকারীরা বলেন, আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাড়ি বসানো হয়। এরপর মাঝরাতে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়।
গুড় উৎপাদনকারী এক ব্যক্তি জানান, প্রতিদিন ২০০ গাছ থেকে ২০-২২ মণ রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। প্রতিবছর শীত মৌসুমসহ চার মাসে মোট ১০-১২ লাখ টাকার গুড় বিক্রি হয়।
গুড় কিনতে অনেক ক্রেতা ভোর থেকেই গাছিদের কাছে হাজির হচ্ছেন। তারা বলেন, ভেজালমুক্ত রস ও গুড় নেয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা।
খেজুর গুড়ে রাসায়নিক মিশ্রণ বন্ধ করতে তদারকির কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। জয়পুরহাট কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদনের সময় যাতে কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজার সিন্ডিকেট প্রতিরোধে মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, জয়পুরহাটে দৈনিক প্রায় ৬৮ মণ গুড় উৎপাদন হয়। যার পাইকারি মূল্য ৪ লাখ টাকার বেশি।
জাগতিক /আ-রহমান।
মন্তব্য করুন