logo
  • শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

ফেনী সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ, মেঝেতেও জায়গা হচ্ছে না

অনলাইন ডেস্ক
  ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২১
সংগ্রহীত

বৈশাখের শুরুতেই তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। প্রচণ্ড গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গরমের অসহনীয় তীব্রতা। গরমের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগবালাই। প্রচণ্ড গরমে যেসব অসুস্থতা দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, ঠাণ্ডা, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানি শূন্যতা, হিটস্ট্রোক। তীব্র গরমের কারণে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে থাকে অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা।

বুধবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। সিট না পেয়ে অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

ফুলগাজী উপজেলার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, গত ৩ দিন আগে অতিরিক্ত জ্বর নিয়ে নাতনিকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। পরীক্ষায় নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে৷ সিট না পেয়ে ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

শহরের নাজির রোড এলাকার বাসিন্দা প্রিয়া আক্তার বলেন, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় ১১ মাস বয়সী মেয়েকে গত পরশু হাসপাতালে এনেছি। ওয়ার্ডে রোগী থাকার মতো অবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডের বাইরে খোলা জায়গায় বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছি।

শর্শদী থেকে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ফাতেমা আক্তার বলেন, হাসপাতালে যে সংখ্যক রোগী একটি মাত্র ওয়ার্ডে কোনোভাবেই এতো রোগীর চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব নয়। জায়গা না থাকায় অনেক রোগী বাধ্য হয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ২৬ বেডের বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৭ জন। এ ওয়ার্ডে অধিকাংশই জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত। গত কয়েক দিনের গরমে রোগীর চাপ বেড়ে হয়েছে ৩ গুন।

হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ বেডের বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৫ জন। তাদের মধ্যে ১৯ জনই শিশু। গত ৩/৪ দিনে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০ জন করে নারী ও শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। একইচিত্র হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেও। মহিলা ওয়ার্ডে ২৬ বেডের বিপরীতে ভর্তি রোগী ৬১ জন। পুরুষ ওয়ার্ডে ২৬ বেডের বিপরীতে রোগী ৫৭ জন।

গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বহিঃবিভাগেও রোগীর চাপ বেড়েছে। বহিঃবিভাগে টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার রোগী বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে প্রায় বেশিরভাগ শিশু ও নারী রোগী। প্রতিদিন গড়ে ৩০০ শিশু রোগী আউটডোর চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোঃ রিদোয়ান আহমেদ বলেন, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ। প্রতিটি ওয়ার্ডেই অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেড না থাকায় অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ভর্তির সময়ই বেড সংকটের কথা রোগীদের বলে দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়ার উন্নতির সাথে সাথে এই সংকট কেটে যাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12