রাজধানীতে পৃথক হত্যা মামলায় সাংবাদিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বুধবার (৫ মার্চ) একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ এবং সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট ফারজানা রূপাকে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় এই গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা সাংবাদিক দম্পতিকে আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানির একপর্যায়ে ফারজানা রূপা আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, "আমি কি আমার জামিনের পক্ষে কথা বলতে পারি?" এ সময় বিচারক জানান, "এখানে কেবল শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হচ্ছে, জামিনের শুনানি নয়।"
ফারজানা রূপা এরপর বলেন, "আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি হত্যা মামলাই যথেষ্ট ছিল, কিন্তু কেন এতগুলো মামলা দেওয়া হলো? রোজার মাসে জামিন চেয়ে পাচ্ছি না, এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে?"
যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুটি মামলার মধ্যে একটিতে শাকিল আহমেদ, ফারজানা রূপা, ঢাকার উত্তরের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপর মামলায় শাকিল ও রূপার পাশাপাশি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নামও রয়েছে।
গত বছর, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১০ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাছে একটি চিঠি পাঠায়। সেখানে দাবি করা হয়, অন্তত ৫০ জন সাংবাদিক আওয়ামী লীগ ও পুলিশের পক্ষে কাজ করেছেন এবং ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছেন। শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপার নাম সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এরপর ২১ আগস্ট, তারা দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
সাংবাদিক মহলে এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর আঘাত। অন্যদিকে, সরকারপন্থী কিছু মহল বলছে, "আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে।"
শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাকে বর্তমানে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, এবং তারা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন