ফেলানী হত্যার ১৪ বছর
পরিবারের দায়িত্ব নিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানী খাতুনের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। ফেলানীর ভাই-বোনের পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের দায়িত্বও তিনি গ্রহণ করেছেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। পোস্টে দেওয়া ছবিতে দেখা যায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে ফেলানীর মা-বাবা ও ভাই উপস্থিত রয়েছেন।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ১৫ বছর বয়সী ফেলানী। নির্মমভাবে তার মরদেহ সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়, যা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এই হত্যার বিচার হয়নি।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম এখনো মেয়ের হত্যার ন্যায়বিচার পাননি। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ফেলানীর ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, "১৪ বছর ধরে আমি ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় আছি। আমার মেয়ে সীমান্ত হত্যার নিষ্ঠুর শিকার হয়েছিল। আমি চাই, অন্তত এখন হলেও সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিক।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে অংশ নিয়ে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানান। তারা বলেন, "ফেলানী হত্যার বিচারহীনতা সীমান্ত হত্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।"
ফেলানীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, "ফেলানী শুধু একটি নাম নয়, এটি সীমান্তে নির্মমতার প্রতীক। তার পরিবারকে সাহায্য করাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমি তার ভাই-বোনের পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের দায়িত্ব নিয়েছি, যাতে তারা ভবিষ্যতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।"
এদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারকে কূটনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা ফেলানী হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন