রাষ্ট্র পরিচালনা আবেগ বা ছেলেখেলার জায়গা নয়: নুরুল হক নূর

গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নূর সম্প্রতি এক টকশোতে গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল অংশীজনদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা। তবে এই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ মানুষ প্রায় অন্ধকারে ছিল।
নূর জানান, শুরুর দিকে সরকার গঠনের বিষয়ে শুধুমাত্র প্রধান উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান এবং কয়েকজন ছাত্রনেতা পুরো বিষয়টি জানতেন। এমনকি সেনাপ্রধানও পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। বিএনপির মতো বড় দলও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতো না। তারা দু-চারটি নাম প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ গঠনে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না।
তিনি আরও বলেন, যাদের সঙ্গেই কথা বলেছি, তারা বলেছেন, ‘আমরা জানি না।’ এটি স্পষ্ট করে দেয় যে, তখনকার সরকার গঠনের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে এটি গোপন রাখা হয়েছিল।
নুরের মতে, গণঅভ্যুত্থানের সময় তরুণরা জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “তরুণরা আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করেছে, আর মানুষ ভেবেছিল, তরুণরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তরুণদের সেই সময়ের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
নূর মনে করেন, তখনকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন ছিল জরুরি। তিনি বলেন, “সে সময় দেশে কার্যকর কোনো সরকার ছিল না। মানুষ ভেবেছিল, অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার গঠন করা জরুরি। কিন্তু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে সরকার পুনর্গঠন করার যে আশা ছিল, তা পূর্ণ হয়নি।
রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে নূর বলেন, “রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এটি পরিচালনায় আবেগ নয়, অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। স্টেট মেকানিজম সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে রাষ্ট্র পরিচালনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে রাষ্ট্র চালানো যায় না। এটি কোনো ছেলেখেলার জায়গা নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, নুরের এই মন্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তরুণ নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিতে পারে। তরুণদের রাজনৈতিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি যে সতর্কবার্তা দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে।
নুরুল হক নূরের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে। বিশেষত তরুণদের ভূমিকাকে ঘিরে রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সুশাসন ও দক্ষ নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হলে তরুণদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের বিকাশ ঘটানো জরুরি।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন