বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না দিয়েও পাস: ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশীকে নিয়ে বিতর্ক
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন। বিষয়টি জানাজানি হলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে অর্থ দফতরের পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সদস্যরা হলেন:
আহ্বায়ক: পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) তানজিউল ইসলাম।
সদস্য: ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক প্রফেসর ড. ইলিয়াছ প্রামানিক।
সদস্য সচিব: গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হান্নান মিয়া।
তবে কমিটিকে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি, যা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, এই কমিটি মূলত ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছে।
গণিত বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষায় ঐশীকে ২৫ নম্বরের মধ্যে ২১ নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাকে ক্লাসে উপস্থিত থাকার জন্যও ৫ নম্বর যোগ করা হয়েছে। অথচ ঐশীর সহপাঠীদের দাবি, তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন দাবি করেছেন, তিনি পরীক্ষা জুলাই-আগস্টেই নিয়ে ফেলেছেন, আর ঐশী তখন পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে বিভাগের সিআরের দেওয়া পরীক্ষার নোটিশ অনুযায়ী, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ১০ ডিসেম্বর।
গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. কমলেশ চন্দ্র রায়: "জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঐশীকে বিভাগে দেখিনি। তার পরীক্ষার বিষয়ে কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।"
পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক হান্নান মিয়া: "কোর্স শিক্ষকরা রেজাল্ট দেন, আমরা তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠাই।"
অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী বলেন, "আমি পরীক্ষা দিয়েছি, তবে তারিখ মনে নেই।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মনে করেন, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।
এখন দেখার বিষয়, তদন্ত কমিটি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং এই বিতর্কিত ঘটনায় কারা দোষী প্রমাণিত হয়।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন