আরাকান আর্মির কবল থেকে মুক্ত দুই কার্গো জাহাজ টেকনাফে, ফের প্রাণ ফেরার আশা আমদানিকারকদের
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অবশেষে চারদিন পর আটক করা দুইটি পণ্যবোঝাই কার্গো জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় এই জাহাজ দুটি নাফ নদের টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।
গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি মিয়ানমারের জান্তা শাসিত রাজধানী ইয়াঙ্গুন থেকে তিনটি কার্গো জাহাজ টেকনাফ বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এসব জাহাজ নাফ নদের মংডু টাউনশিপ এলাকায় পৌঁছালে আরাকান আর্মি তাদের আটকে দেয়। তবে একই সময়ে মংডু টাউনশিপ থেকে কাঠবোঝাই একটি মিয়ানমারি জাহাজকে টেকনাফ বন্দরে পৌঁছানোর অনুমতি দেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
টেকনাফ স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর জানান, আরাকান আর্মি চারদিন পর তিনটি জাহাজের মধ্যে দুইটি ছেড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, “জাহাজগুলোতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রায় ৪০ কোটি টাকার ৫০ হাজার বস্তা পণ্য রয়েছে। এখনো একটি জাহাজের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এটি শীঘ্রই বন্দরে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চারদিন পর কার্গো জাহাজগুলো ফেরত পাওয়ায় আমদানিকারকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। ব্যবসায়ীদের মতে, দেড় মাস বন্ধ থাকার পর মিয়ানমার থেকে বড় চালানের পণ্য আসা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আনবে।
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, “দুটি কার্গো জাহাজ বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে। আরেকটি জাহাজ এখনো পথে রয়েছে। এই পণ্য আমদানির মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করবে।”
পণ্যের তালিকা
সুপারি
শুঁটকি মাছ
জুতা-স্যান্ডেল
বরই ও তেঁতুল
নানাবিধ আচার
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপ দখলে নেয় আরাকান আর্মি। এর ফলে ওই অঞ্চলে বাণিজ্য কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী একটি জাহাজ টেকনাফ বন্দরে এসেছিল।
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ঘটনার পর টেকনাফ বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হতে হবে।
জাগতিক /এস আউ
মন্তব্য করুন