কোরবানির ছাগল থেকে দুর্নীতির জাল আলোচিত মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী গ্রেফতার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান এবং তার প্রথম স্ত্রী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত মতিউর পরিবার
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তার ও তার পরিবারের বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
দুদকের অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে:
প্রথম মামলায়: মতিউর রহমান ও লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।
দ্বিতীয় মামলায়: তাদের মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ৫৩ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদের অভিযোগ।
তৃতীয় মামলায়: ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ৪২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন।
মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীর বিরুদ্ধেও ১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুটি মামলা রয়েছে।
গত বছর কোরবানির ঈদে মতিউরের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে আলোচনায় আসেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের পারিবারিক সম্পদ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মতিউর রহমান ও তার পরিবারের নামে ৬৫ বিঘা জমি, ৮টি ফ্ল্যাট, ২টি রিসোর্ট, ৩টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য বিপুল সম্পদ রয়েছে।
দুদক তাদের ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবার হিসাব এবং শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করেছে।
২০২৪ সালের জুনে আদালত মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন। এরপর দুদকের নোটিশে তারা ২৯ আগস্ট তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেয়।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলাগুলো তদন্তাধীন।
ছাগলকাণ্ড থেকে শুরু হয়ে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এই বিতর্কিত অধ্যায়ের পরবর্তী ধাপে প্রবেশ হলো। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা এই অভিযোগ থেকে মুক্তি পাবেন, নাকি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
জাগতিক /আ-রহমান।
মন্তব্য করুন