logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকাতির ঘটনার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যবসায়ীর ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৫০ টাকার মালামাল ডাকাতির ঘটনার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‍্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক মেজর অনাবিল ইমাম। র‍্যাব সূত্রে জানা যায়- গত ২৬ মার্চ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন এভেস্টা এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানে ৫০/৬০ জন অজ্ঞাত নামা দুস্কৃতিকারী কর্মীদের মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রেখে আনুমানিক ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৫০ টাকার মালামাল লুট করে একটি অজ্ঞাত ট্রাক যোগে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করে।  পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে কুখ্যাত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী সিদ্ধিরগঞ্জের জহিরের ছেলে পায়েলকে (৩২) সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) গ্রেফতার করা হয়। ডাকাত পায়েলের পিসিপিআর যাচাই করে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এর একটি মামলা পাওয়া যায়। আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর
শুভসংঘের সহায়তায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সানজিদা আক্তার রুবিনা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ
গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধানের পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সাড়ে ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা
মাদারীপুরে রাজৈরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ
মাদারীপুরে রাজৈরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই ওসিসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।  শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজৈর উপজেলার বেপারিপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ঘণ্টাব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর গ্রামের লাভলুর ছেলে সালাউদ্দিন (১৮), হয়দার আকনের ছেলে সাগর আকন (২৩), মাহবুব মোল্ল্যার ছেলে ওমর মোল্লা (২২), হুমায়ুন খানের ছেলে ইমন খান (২০), হাবি শেখের ছেলে সাব্বির শেখ (১৮), রাজৈর থানার পুলিশ সদস্য জুয়েনসহ ৯ জন রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।  এছাড়াও রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান, তদন্ত ওসি সঞ্জয় কুমার ঘোষ ও এসআই তারেকসহ অন্তত ১২ জন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী সময় গত ২ এপ্রিল রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর ফুচকা ব্রিজ এলাকায় বাজি ফাটায় বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ আকন ও তার বন্ধুরা। এসময় ওই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তার বন্ধুরা মিলে তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে গত ৩ এপ্রিল সকালে রাজৈর বেপারিপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় জুনায়েদ ও তার লোকজন। পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই অনিক খান (৩১) বাদি হয়ে জুনায়েতকে প্রধানসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।  এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুসে ওঠে উভয় গ্রামের লোকজন। একপর্যায়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে দুই গ্রাম লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এসময় ব্যপক ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ঘন্টাব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে দুই ওসি ও অন্তত ১২ পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যসহ ২৫ জন আহত হয়। রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আমি ও তদন্ত ওসি সহ কমপক্ষে ১০/১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এছাড়া উভয় গ্রামের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। রবিবার সকালে রমনা বটমূলসহ নববর্ষ উৎসবে র‌্যাবের নিরাপত্তা নিয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।   র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। আশা করি উৎসবটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।   শহিদুর রহমান বলেন, বৈশাখী উৎসবকে ঘিরে অপপ্রচার রোধ করতে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। নববর্ষের উৎসবকে কেন্দ্র করে ইভটিজিং যাতে না হয়, সেজন্য সতর্ক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।   তিনি আরও জানান, চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি ছিলো কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি?
বাংলাদেশের একটি আদালত আজ রোববার (১৩ এপ্রিল) টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এ তথ্য জানিয়েছে। টিউলিপ সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে। তবে তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। শেখ হাসিনার পতনের আগে তিনি যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু ফ্ল্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় তাকে।রাজধানীর পূর্বাচলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে শেখ হাসিনাকে দিয়ে নিজের মা শেখ রেহেনা, ভাই রেদওয়ান ববি সিদ্দিক এবং বোন আজমিনা সিদ্দিকের জন্য প্লট বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আজ তার বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত মামলা পর্যালোচনা করবেন ঢাকার একটি আদালত। ৪২ বছর বয়সী টিউলিপের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়।ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে, টিউলিপ এমপি থাকা অবস্থায়, বিদেশি কোনো মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এরপর বিচারের জন্য ব্রিটেনের কাছে তাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ। পূর্বাচলে প্লট বাগিয়ে নেওয়ায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। যারমধ্যে হাসিনা পরিবারেই ছয় সদস্য রয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাতের অভিযোগে নাম আসে টিউলিপ সিদ্দিকের। এ খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর চাপে পড়েন তিনি। এরপর খবর বের হয়, টিউলিপ লন্ডনে হাসিনার ঘনিষ্ঠদের দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। কিন্তু ২০২২ সালে ডেইলি মেইলেকে তিনি মিথ্যা কথা বলেন। তিনি জানান, ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মা তাকে কিনে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে সত্যি সামনে আসে। এমন পরিস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন। এখন তার বিরুদ্ধে পূর্বাচলের প্লট বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকার এ কর্মসূচি স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে
রাজধানী ঢাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে লাখ লাখ বিক্ষোভকারী। ঢাকার এ কর্মসূচি স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে। মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও বার্তাসংস্থা এ কর্মসূচির খবর প্রকাশ করেছে। বার্তাসংস্থা এপির প্রতিবেদনে ‘বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লাখো মানুষের বিক্ষোভ’ শীর্ষক শিরোনাম করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে শনিবার বাংলাদেশের রাজধানীতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সমাবেশ করেছেন। এ দিন প্রায় এক লাখ বিক্ষোভকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়েছিলেন। তারা শত শত ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এবং ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেন। ওয়াশিংটন পোস্টের শিরোনামে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় এক লাখ মানুষের সমাবেশ। সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সংঘাতের কারণে সৃষ্ট জাতীয় সংকট: গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে হাজারো মানুষের সমাবেশ।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ। প্রায় এক লাখ বিক্ষোভকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন। তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে ‘ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিতে থাকেন। অনেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ইসরায়েলের সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে প্রতিবাদ জানান। টরন্টো স্টার নামের একটি গণমাধ্যমে ‘বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় এক লাখ মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ’ শীর্ষক শিরোনাম করা হয়েছে। এছাড়া দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, এমএসএন, স্টার ট্রিবিউন, সিটিভিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা যেন হয়ে উঠেছিল এক খণ্ড ফিলিস্তিন
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা যেন হয়ে উঠেছিল এক খণ্ড ফিলিস্তিন। গতকাল সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকা অভিমুখে ছিল মানুষের ঢল। ‘তুমি কে, আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ স্লোগানে মুখরিত ছিল ঢাকার রাজপথ। লাখ লাখ মানুষের মিছিলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং আশপাশের এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মানুষের হাতে ছিল ফিলিস্তিন আর বাংলাদেশের পতাকা। মাথায় ছিল ফিলিস্তিনি রুমাল কেফিয়াহ। অনেকের হাতে ছিল প্রতীকী রক্তাক্ত মৃত শিশুর লাশ। মিছিলে অংশ নেওয়া মানুষকে বিনামূল্যে পানি ও লেবুর শরবত দিতে দেখা গেছে অনেককে। কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র সংগঠনের সদস্য, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সচেতন সাধারণ নাগরিকরা। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড- ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’, ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’। তপ্ত রোদে হাঁটতে হাঁটতে হ্যান্ডমাইক কিংবা খালি গলায় ছিল ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির স্লোগান। ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ এসব স্লোগান দেন তারা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে কেন্দ্র করে আশপাশের মূল সড়কগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মিরপুর থেকে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, বাংলামোটর ও শাহবাগ। এদিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে সায়েন্সল্যাব, টিএসসি থেকে নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিকেল। মৎস্য ভবন থেকে পল্টন, কাকরাইল, মগবাজার এলাকাজুড়ে ছিল কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মানুষের স্রোত। মানুষের চাপে কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল সব ধরনের যান চলাচল। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা নির্বিঘ্নে এসব রাজপথে মিছিল করেছেন। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনো কর্মসূচিকে ঘিরে এত মানুষের উপস্থিতি নিকট অতীতে তারা দেখেননি। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে গোটা বিশ্বেই। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে গতকাল এই ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূলমঞ্চে বিকাল ৩টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি। তেলাওয়াত করেন বিখ্যাত কারি আহমদ বিন ইউসুফ। বক্তব্যে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা ও মতের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিন সেখানকার মানুষের অধিকার। গাজার মানুষের ওপর জুলুম বন্ধের দাবিতে আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’ ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, জনতার এই মহাসমুদ্র ফিলিস্তিন ও আল আকসার প্রতি আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা তাদের থেকে দূরে থাকলেও আজকের এই বিপুল উপস্থিতি প্রমাণ করে সবার হৃদয়ে বাস করে একটি করে ফিলিস্তিন। এ সময় তিনি ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘আমার ভাই শহীদ কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর-জেনোসাইড নো মোর’ বলে স্লোগান দেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় বিকাল ৪টায় মোনাজাত পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। মোনাজাতে অংশ নেওয়া মানুষের চোখে ছিল অশ্রু। ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা, শিশু ও নারীদের মৃত্যু, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার করুণ বাস্তবতা হৃদয়ে নিয়ে মানুষ ফিলিস্তিনিদের জন্য মুক্তি ও শান্তি কামনা করে। এ সময় পুরো এলাকায় কান্নার রুল পড়ে যায়। কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন সংগঠন, ইসলামি বক্তা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছেন। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বিএনপির পক্ষ থেকে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক কায়েম, অ্যাক্টিভিস্ট সাইমুম সাদি, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী প্রমুখ।    
এ সরকারের আমলেই বিচার বিভাগের সব সংস্কারের চেষ্টা করা হবে
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই বিচারক সংকট নিরসন, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় সব সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। শনিবার সকালে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালত সম্প্রসারণের জন্য ভবন নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।  আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি জেলায় এজলাস সংকট, বিচারক সংকট এগুলো কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অন্তবর্তী সরকারের আমলেই এগুলো সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করব। পরিদর্শন শেষে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মিলনায়তনে বিচারক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন আইন উপদেষ্টা।