চীনে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে চার কানাডিয়ান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সম্প্রতি চীনে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে চার কানাডিয়ান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে, যা কানাডা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বুধবার এই বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, চীনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর, কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে নমনীয়তার আবেদন করা হলেও তা উপেক্ষা করে চীন এই শাস্তি কার্যকর করেছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোলি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন, “আমরা চীনের এই পদক্ষেপকে কঠোরভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এছাড়া, জোলি সাংবাদিকদের বলেন, "কানাডার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষার অনুরোধের কারণে আমরা মামলার বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করতে পারছি না।"
চীনের পক্ষ থেকে গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকায় পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কানাডিয়ান নাগরিকরা মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং এর ফলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। চীনের সরকারের মতে, মাদক অপরাধগুলি অত্যন্ত গুরুতর এবং এটি সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দেশটি মাদক-সম্পর্কিত অপরাধের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি গ্রহণ করে এবং কঠোর শাস্তি দেয়।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি উল্লেখ করেন, তিনি এবং কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো চীনের কাছে নমনীয়তার আবেদন করেছিলেন, তবে চীন তাতে সাড়া দেয়নি।
এদিকে, চীন প্রতিদিনই মৃত্যুদণ্ডের পরিসংখ্যান রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে রাখে। যদিও মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে যে, চীন প্রতি বছর হাজার হাজার লোকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।
২০১৮ সালে কানাডা এবং চীনের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে যখন চীনা টেলিকম giant হুয়াওয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝোকে কানাডায় আটক করা হয়। এরপর বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে প্রতিশোধমূলকভাবে দুই কানাডিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়, যা চীন-কানাডা সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তোলে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে কানাডার নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তবে বেইজিং এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কানাডা-চীনের সম্পর্ক এখনো এক সংকটময় পর্যায়ে রয়েছে, এবং এই নতুন ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন