হুথিদের হামলা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র-ইয়েমেন আলোচনা, লোহিত সাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে জোর

নবনিযুক্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারকের সঙ্গে ফোনালাপে হুথিদের হামলা বন্ধ এবং তাদের সামরিক কার্যক্রম নির্মূল করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আলোচনায় লোহিত সাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং আশপাশের পানিপথে হুথিদের হুমকি মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। হুথিদের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক শিপিং লাইন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি তৈরি করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, কূটনীতিক, জাতিসংঘ এবং এনজিও কর্মীদের বেআইনিভাবে আটক এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মার্কো রুবিও লোহিত সাগরে হুথিদের আক্রমণ বন্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর হুথিরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরাইল এবং তার মিত্র জাহাজগুলোতে একাধিক হামলা চালিয়ে আসছে। হুথিদের হামলার কারণে আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ব্যাপক ঝুঁকিতে পড়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে এসে গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) একটি নির্বাহী আদেশে হুথিদের ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত করেছেন। এর ফলে, হুথিদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। মার্কো রুবিও এ বিষয়ে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এবং আঞ্চলিক সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক মার্কিন সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, হুথিদের নির্মূল না করা পর্যন্ত আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং শান্তি সম্ভব নয়। তিনি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হুথিদের ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত করা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি পুনর্বিন্যাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
হুথি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে ইয়েমেনে সংঘাত চালিয়ে আসছে। তারা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছে। লোহিত সাগরে তাদের আক্রমণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
নতুন মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ হুথি ইস্যুতে কূটনৈতিক সমাধানের পথ উন্মুক্ত করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন