লাদাখে চীনের সামরিক মহড়া: ভারত কি নতুন সংকটে
ভারত ও চীনের সীমান্ত সংঘাতের ইতিহাস নতুন নয়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে পরাজয়ের পর লাদাখের আকসাই চীন অঞ্চল চীনের দখলে চলে যায়, যা ভারতীয় মনোবল ও কৌশলগত অবস্থানে বড় আঘাত হানে। বর্তমানে চীন-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। বিশেষত লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের সামরিক তৎপরতা ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
সম্প্রতি লাদাখের লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (LAC) এলাকায় বিশাল সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। পেন্টাগনের তথ্য অনুসারে, চীন সেখানে আধুনিক ট্যাংক, কামান এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে। এমনকি পাহাড়ি অঞ্চলে দ্রুত গোলাবারুদ সরবরাহ ও যানবাহন চলাচলের অনুশীলনও চালিয়েছে তারা।
চীনের এই মহড়া থেকে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হিমালয় অঞ্চলে নিজেদের সামরিক দখল আরও শক্তিশালী করতে চায় বেইজিং। এছাড়া, চীন তাদের দূরপাল্লার আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
চীনের এই সামরিক তৎপরতা ভারতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে অরুণাচল প্রদেশের একটি বড় অংশকে "দক্ষিণ তিব্বত" বলে দাবি করা এবং লাদাখে উত্তেজনা বাড়ানো চীনের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য এটি একটি কঠিন সময়। চীনের এই আগ্রাসনের মোকাবিলায় ভারতের সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের প্রতি নমনীয় অবস্থান ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এই পরিস্থিতিতে, ভারতের পক্ষে সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও সুদৃঢ় করার ওপর জোর দিচ্ছে ভারত।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের সামরিক প্রস্তুতি এবং সীমান্তে তাদের তৎপরতা ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে সামরিক শক্তি ও কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে ভারত এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতীয় নেতৃত্বের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। এই পরিস্থিতি কেবল লাদাখ নয়, অরুণাচল প্রদেশের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন