ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই: অতিরিক্ত সেবনের ঝুঁকি এবং সতর্কতা

ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বক, চুল এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয়তা না জেনে এটি সেবন বিপজ্জনক হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ভিটামিন ই শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যাল নিয়ন্ত্রণে রেখে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এছাড়া ফুসফুস, মস্তিষ্কের স্নায়ু, এবং ঋতুচক্র সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে ভিটামিন ই কার্যকর।
‘জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন’-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ভিটামিন ই সেবন করলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষত, ভিটামিন ই ফ্যাটে দ্রবণীয় হওয়ায় এটি লিভারে জমা হয়ে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত সেবনের ফলে লিভার টক্সিসিটি, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেশির দুর্বলতা এবং রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে।
প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রায় ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই প্রয়োজন। সাধারণত কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, জলপাই, ব্রকলি, বেল পেপার, ডিমের কুসুম এবং সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট সেবন করা হতো, তবে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এখন এটি থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের ভিটামিন ই-এর ঘাটতি নির্ণয় করা জরুরি।
ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই-এর কার্যকারিতা অস্বীকার করা যায় না। তবে এটি সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ এবং রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় করা উচিত। অতিরিক্ত ভিটামিন ই সেবন করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিক ডোজেই স্বাস্থ্যকর এবং ঝুঁকিমুক্ত উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন