গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ
গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের তরঙ্গ ইঁদুরের মস্তিষ্কের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গবেষণাটি সম্প্রতি ন্যাচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় দুটি গর্ভবতী ইঁদুরের দলের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়। এক দলের কাছে সক্রিয় মোবাইল ফোন এবং অন্য দলের কাছে বন্ধ মোবাইল ফোন রাখা হয়েছিল। দেখা গেছে, সক্রিয় মোবাইল ফোনের সংস্পর্শে থাকা ইঁদুরগুলোর বাচ্চাদের মধ্যে অতিরিক্ত চঞ্চলতা, উদ্বেগ এবং দুর্বল স্মৃতিশক্তির মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া ড. হিউ টেইলর মনে করেন, মানুষের ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোনের তরঙ্গ একই ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তবে তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মোবাইল ফোনের বিকিরণকে সম্ভাব্য ক্যান্সারজনিত ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গবেষকরা মনে করেন, মোবাইলের বিকিরণ মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে প্রভাব ফেলতে পারে, যা অ্যাটেনশন ডিফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার (ADHD)-এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
২০১৭ সালে বার্সেলোনায় পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী মায়েরা যারা বেশি সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছেন, তাদের সন্তানদের মধ্যে চঞ্চলতা এবং হাইপারঅ্যাকটিভিটির ঝুঁকি বেশি।
গবেষকদের মতে, গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত। সুরক্ষার জন্য নিচের নিয়মগুলো মেনে চলা যেতে পারে:
ফোনে কথা বলার সময় স্পিকার বা হেডসেট ব্যবহার করুন।
ফোন শরীর থেকে দূরে রাখুন এবং প্রয়োজন ছাড়া ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
ঘুমানোর সময় ফোন বন্ধ রাখুন বা এয়ারপ্লেন মোডে রাখুন।
গবেষণাগুলোর বেশিরভাগই সীমিত পর্যায়ে পরিচালিত হওয়ায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তবে গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো এবং বিকিরণ এড়ানোর চেষ্টা করা মায়ের ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জাগতিক /এসআই
মন্তব্য করুন