হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় মহিলাদের শরীর ও মনের ক্ষতি, লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হরমোন। তবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে তা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব ফেলে। বিশেষত মহিলারা হরমোনজনিত সমস্যায় বেশি জটিলতায় ভোগেন। কিন্তু অনেকেই এই সমস্যা সম্পর্কে অবগত হন না। তাই শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক আছে কিনা, তা নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এমন কিছু লক্ষণের উল্লেখ করা হলো, যা দেখে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে হরমোনজনিত সমস্যা আছে কিনা।
১. অবসাদ ও মুড সুইং
ঘন ঘন মুড পরিবর্তন বা অবসাদ মানসিক অবস্থার পাশাপাশি শারীরিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। থাইরয়েড বা অন্যান্য হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।
২. অতিরিক্ত ক্লান্তি
যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার পরও যদি ক্লান্তি দূর না হয়, তবে তা হতে পারে হরমোনজনিত সমস্যা। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই ক্লান্তি অনুভব করা হরমোনের ভারসাম্য নষ্টের একটি সাধারণ লক্ষণ।
৩. অনিদ্রা
সুস্থতার জন্য প্রতিদিনের ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনিদ্রার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তা হতে পারে হরমোনজনিত সমস্যার ফল। সেক্ষেত্রে অবশ্যই হরমোনের পরীক্ষা করানো উচিত।
৪. চুল পড়া
পর্যাপ্ত যত্ন নেওয়া সত্ত্বেও যদি রোজ প্রচুর চুল পড়ে, তবে তা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ হতে পারে। অকালে চুল পড়া বা টাক পড়া সমস্যার পেছনে হরমোনের বড় ভূমিকা থাকতে পারে।
৫. হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া
নিয়মিত শরীরচর্চা বা ডায়েট করার পরেও যদি ওজন বেড়ে যায়, তবে তা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার একটি প্রধান ইঙ্গিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইনসুলিন, থাইরয়েড, বা কোর্টিসলের মতো হরমোনের সমস্যায় হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
৬. ত্বকের সমস্যা
হরমোনের ভারসাম্যহীনতার আরেকটি বড় লক্ষণ হলো ত্বকের সমস্যা। ব্রণ, অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক, বা শুষ্ক ত্বকের মতো সমস্যাগুলো প্রায়ই হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হয়।
৭. মাসিক অনিয়ম
মাসিক চক্রের অনিয়ম বা ব্যথা হরমোনজনিত অসঙ্গতির অন্যতম পরিচায়ক। এস্ট্রোজেন বা প্রজেস্টেরনের ভারসাম্যহীনতায় এমনটি হতে পারে।
৮. হজমের সমস্যা
ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেট ফাঁপার মতো সমস্যা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তবে তা হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে।
কী করবেন?
এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজন হলে রক্ত পরীক্ষা বা হরমোন পরীক্ষা করান। এছাড়া, হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সুস্থ জীবনযাত্রা অনুসরণ করুন। সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ কমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হন এবং সময়মতো সমস্যা শনাক্ত করে সঠিক পদক্ষেপ নিন।
জাগতিক /জেএএস
মন্তব্য করুন