logo
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

সামুদ্রিক খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিক খাচ্ছি আমরা

  ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৪

পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে- আমাদের প্রতিদিনের সামুদ্রিক খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ছে। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা, যা মূলত পোশাক, প্যাকেজিং ও অন্যান্য প্লাস্টিক সামগ্রী থেকে পরিবেশে মিশে যায় এবং পরে তা সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। গবেষণাটি এই সমস্যার পরিধি ও তা মোকাবিলার প্রযুক্তিগত এবং কৌশলগত সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে পোর্টল্যান্ড স্টেটের অ্যাপ্লাইড কোস্টাল ইকোলজি ল্যাব থেকে। অধ্যাপক এলিস গ্র্যানেক এবং তাঁর দল ওরেগনের ফিনফিশ ও শেলফিশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য কাজ করেছেন। গবেষণার নেতৃত্ব দেন সামার ট্রেলার, যিনি ২০২২ সালে পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এ গবেষণায় সহায়ক ছিলেন মারিলিন ডানকান, যিনি ২০২৪ সালে স্নাতক হন।

গবেষকরা ওরেগনের ছয়টি সামুদ্রিক প্রজাতির খাওয়ার উপযোগী অংশে মানুষের তৈরি প্লাস্টিককণা পরীক্ষা করেন। এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে ছিল ব্ল্যাক রকফিশ, লিঙ্গকড, চিনুক স্যামন, প্যাসিফিক হেরিং, প্যাসিফিক ল্যাম্প্রে এবং পিঙ্ক শ্রিম্প। এদের মধ্যে পিঙ্ক শ্রিম্পে সবচেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এরা মূলত সমুদ্রের উপরের স্তরে খাবার খায়। অন্যদিকে চিনুক স্যামন ও ব্ল্যাক রকফিশে কণার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল।

গবেষণার চমকপ্রদ দিক হলো, মাছ বা চিংড়ি বাজার থেকে সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করা হলেও মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের মাত্রা পরিবর্তিত হয়নি। রান্নার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিলেও অনেক সময় কণাগুলো থেকে যায়।

গবেষণার ফলাফলে জানা যায়, মাইক্রোপ্লাস্টিক শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর অন্ত্রে সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং তা মাংসপেশীতেও প্রবেশ করে, যা সরাসরি মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এ বিষয়ে গবেষক সুসান ব্র্যান্ডার বলেন, “এটি শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর জন্যই নয়, মানুষের জন্যও বড় উদ্বেগের বিষয়।”

এমনকি সামুদ্রিক খাবার খাওয়া বন্ধ করেও এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, কারণ মাইক্রোপ্লাস্টিক সর্বত্রই রয়েছে। বোতলজাত পানি, মধু, মাংস, সবজি এমনকি ভেজিটেরিয়ান খাবারেও এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।

সমাধানের পথে একধাপ এগিয়ে গবেষকরা এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ কমানোর প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছেন। সামুদ্রিক খাবার থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক শোধনের জন্য বিশেষ ফিল্টার তৈরির কাজ চলছে, যা প্লাস্টিক কণা আটকে রাখতে সক্ষম হবে। এছাড়া সড়কপথের পানি নিষ্কাশনে মাইক্রোপ্লাস্টিক ধরতে বিশেষ ফিল্টার স্থাপনেরও পরীক্ষা চলছে।

গবেষণার মূল বার্তা হলো, পরিবেশে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক আমরা ছড়াচ্ছি, তা শেষ পর্যন্ত আমাদের খাদ্যেও ফিরে আসছে। তাই দূষণ কমাতে ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সূত্র: sciencedaily

জাগতিক/স্বাস্থ্য/রিয়াজ

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
নিয়মিত হেডফোন ব্যবহার করলে কি ক্ষতি হতে পারে 
চীনে জনসংখ্যা হ্রাস অব্যাহত, দেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ বাড়ছে
রাজধানী ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত, বায়ুদূষণে বিশ্বের ৫ম স্থানে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ নিয়ে পুতুলের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু