সাইফ আলি খান হামলা মামলা
শরিফুল ইসলাম শাহজাদই চূড়ান্ত অভিযুক্ত, বলছে মুম্বাই পুলিশ

নানা নাটকীয়তার পর বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান-এর ওপর হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে শরিফুল ইসলাম শাহজাদ-কে চূড়ান্ত করেছে মুম্বাই পুলিশ। পুলিশের দাবি, তাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যে, শরিফুলই সেদিন সাইফের অভিজাত বাড়ির ১২ তলায় চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল এবং তাকে বাধা দিতে গেলে সাইফকে ছুরিকাঘাত করে।
বুধবার মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেলে পুলিশের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শনাক্তকরণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই শনাক্তকরণে ছিলেন—
সাইফ আলি খানের বাড়ির কর্মচারী আরিয়ামা ফিলিপ
সাইফের ছেলে জেহ’র দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী জুনু
এই দুইজনই স্বচক্ষে দেখেছিলেন শরিফুলকে সেই রাতে জেহর ঘরের বাইরে এবং তার সামনেই সাইফ আলি খানের ওপর হামলা চালাতে।
মুম্বাই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—
সিসিটিভি ফুটেজে থাকা চেহারার সাথে শরিফুলের মিল রয়েছে।
ফেশিয়াল রিকগনিশন টেস্টে প্রমাণ মিলেছে, আটক হওয়া ব্যক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজে থাকা ব্যক্তি একই।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শরিফুল বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন এবং কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেছেন— এমন প্রমাণও তাদের হাতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি ভোরে সাইফ আলি খানের বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে ঢোকে এক যুবক।
একপর্যায়ে সাইফ বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং তাকে বাধা দিতে গেলে ছুরিকাঘাতের শিকার হন।
রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৮ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের ঠাণের একটি স্থান থেকে শরিফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মুম্বাই পুলিশের দাবি, শরিফুল ইসলাম শাহজাদ বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন এবং কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেন।
তার পাসপোর্ট ও ভ্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে তিনি একাধিকবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়েছেন।
পুলিশ তার অতীত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও তদন্ত করছে।
শরিফুল বর্তমানে মুম্বাইয়ের আর্থার রোড সংশোধনাগারে বন্দী।
তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই আদালতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
ভারতীয় পেনাল কোডের একাধিক ধারায় তার বিচার হবে, যার মধ্যে রয়েছে চুরি, অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং হত্যাচেষ্টা।
এই ঘটনার পর মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে বলিউড তারকাদের বাসভবন ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাটগুলোর সিকিউরিটি টিমকে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী শুনানি ও পুলিশের অবস্থান
মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে,
শরিফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ ভারতীয় আদালতে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাবে।
সাইফ আলি খান বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানা গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানানো হয়েছে।
এই ঘটনায় বলিউডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং অনেক তারকাই তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করছেন।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন