ইলিয়াস কাঞ্চনের চোখে অঞ্জনা ছিলেন ‘পরীর মতো ডল
বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা আর আমাদের মাঝে নেই। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই নায়িকা তার অভিষেক থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করে গেছেন।
১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অঞ্জনা চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তবে তার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিলো ‘দস্যু বনহুর’। এই ছবিতে অঞ্জনার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সোহেল রানা। সিনেমাটি ছিল একটি সুপারহিট ছবি, যা তার ক্যারিয়ারের ভিত্তি গড়ে দেয়।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন অঞ্জনাকে প্রথম দেখার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম কোনো নায়িকাকে দেখেছিলাম অঞ্জনাকে। সে ছিল টিপু সুলতান রোডে ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়। আমি তখন ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছি। অঞ্জনাকে দেখে মনে হয়েছিল, মানুষ কীভাবে এত সুন্দর হতে পারে! আমার কাছে মনে হয়েছিল, তিনি মানুষ নন, যেন পরীর মতো বা একটি ডল।’
তিনি আরও বলেন, ‘অঞ্জনা সারাজীবন চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করেছেন। আমরা তাকে কতটা মূল্যায়ন করেছি, সেটাই এখন ভাববার বিষয়।’
অঞ্জনার প্রথম ছবি ‘দস্যু বনহুর’ তাকে রাতারাতি তারকাখ্যাতি এনে দেয়। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয়ের জন্য তিনি পেয়েছেন বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
আন্তর্জাতিক পুরস্কার
একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক
বাচসাস পুরস্কার
অভিনয়ের পাশাপাশি নৃত্যশিল্পী হিসেবেও তিনি ছিলেন অনন্য। তিনি নাচের জন্যও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহু স্বীকৃতি অর্জন করেছেন।
অঞ্জনা তার পুরো জীবন চলচ্চিত্রকে উৎসর্গ করেছিলেন। তার অভিনয় দক্ষতা এবং গ্ল্যামার তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের এক আইকনিক নায়িকায় পরিণত করেছিল।
তার চলে যাওয়া বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। অঞ্জনার মতো শিল্পীরা যুগে যুগে একবারই জন্ম নেন। তার অবদান বাংলা চলচ্চিত্রে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অঞ্জনার স্মৃতিতে আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।
জাগতিক /জেএএস
মন্তব্য করুন