logo
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

ইসকন-বিরোধী ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

অনলাইন ডেস্ক
  ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২০

চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজার এলাকার হাজারী গলিতে ফেসবুকে একটি ইসকন-বিরোধী পোস্টের জেরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮২ জনকে আটক করা হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


ঘটনার প্রেক্ষিতে যৌথ বাহিনী চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। অভিযানের সময় লাঠিচার্জ ও স্থানীয় হিন্দু ব্যবসায়ীদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। যৌথবাহিনীর মুখপাত্র লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ জানান, অভিযানের সময় তাদের উপর এসিড ও ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়েছে, যাতে পাঁচ সেনা সদস্য ও সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় দেড়শ ব্যবসায়ী জুয়েলারি ব্যবসায় নিযুক্ত। ওই এলাকায় এক মুসলিম ব্যবসায়ী ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরই উত্তেজনা শুরু হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঐ ব্যবসায়ীকে তার দোকানে ঘিরে ফেললে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথবাহিনীকে আসতে হয়।


যৌথবাহিনী পোস্টদাতা ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা বাধা দেয় এবং ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। যৌথবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং এসিড হামলা থেকে রক্ষা পেতে চেষ্টা করে।


চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের মুখপাত্র কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।


ইসকন বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে। সম্প্রতি দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকনকে 'সাম্প্রদায়িক ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংগঠন' হিসেবে মন্তব্য করেন। ইসকন উক্ত বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। ইসকন নিজেদের অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সংগঠন হিসেবে দাবী করেছে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে, যার মধ্যে হাজারী গলির ঘটনা সর্বশেষ সংযোজন। ইসকনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় সংস্থার নাম ব্যবহার করে ভুল বার্তা প্রচার করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।


হাজারী গলির অনেক ব্যবসায়ী বলছেন, ধর্মীয় সংগঠন সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্যের কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়